সরকারি ব্যয়ে কড়াকড়ি: গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফর সাময়িকভাবে স্থগিত
অর্থ বিভাগের নতুন পরিপত্রে ব্যয়সংকোচনের অংশ হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সরকারি যানবাহন ক্রয় ও বিদেশে কর্মশালা/সেমিনারে অংশগ্রহণ


এবিএনএ: ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ের কৌশলের অংশ হিসেবে গাড়ি, জাহাজ ও বিমান কেনা এবং বিদেশে সরকারি খরচে কর্মশালা ও সেমিনারে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে বুধবার জারি করা একটি পরিপত্রে এই কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়, এই অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ, কর্মশালা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে। এর লক্ষ্য হচ্ছে সরকারিভাবে খরচ হ্রাস করে কৃচ্ছ্রসাধন করা।
তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকবে। যেমন:
-
স্কলারশিপ, ফেলোশিপ বা বিদেশি অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি অধ্যয়নের সুযোগে ভ্রমণ করা যাবে।
-
উন্নয়ন সহযোগীদের আমন্ত্রণে প্রশিক্ষণেও বিদেশ যেতে কোনো বাধা থাকবে না।
এছাড়া PSI (প্রিশিপমেন্ট ইন্সপেকশন) ও FAT (ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপট্যান্স টেস্ট) সফরের জন্য বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। এই সফরের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গাড়ি, জাহাজ বা বিমান কেনা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরনো যানবাহন প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে বাজেট থেকে ব্যয় করা যাবে।
পরিচালন বাজেটে থোক বরাদ্দের অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে উন্নয়ন বাজেটের ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ বা মন্ত্রণালয়ের অধীন থোক বরাদ্দ অর্থ ব্যয় করতে চাইলে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমতি প্রয়োজন হবে।
নতুন ভবন নির্মাণেও সীমাবদ্ধতা জারি করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কোনো খাতে নতুন আবাসিক বা অনাবাসিক ভবন নির্মাণ পরিচালন বাজেটের আওতায় করা যাবে না। তবে চলমান প্রকল্প ৫০ শতাংশের বেশি অগ্রগতি দেখাতে পারলে অর্থ বিভাগের অনুমোদনে ব্যয় করা যেতে পারে।
ভূমি অধিগ্রহণের খরচ পরিচালন বাজেটের আওতায় বন্ধ থাকলেও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় তা অর্থ বিভাগের অনুমতিতে করা যাবে।
সরকারের এই নতুন নির্দেশনার মাধ্যমে সতর্ক ও নিয়ন্ত্রিত ব্যয়ের পথেই অগ্রসর হচ্ছে চলতি অর্থবছর, যা অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।