গাজায় রক্তপাত থামছে না: ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা পেরিয়েছে ৭০ হাজারের সীমা
যুদ্ধবিরতি অগ্রাহ্য করে স্থল, নৌ ও আকাশপথে হামলা; নিহতদের মধ্যে শিশুসহ অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক


এবিএনএ: যুদ্ধবিরতির মধ্যেও থামছে না গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা। ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা পেরিয়েছে ৭০ হাজারের বেশি। শনিবার (২৯ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনের বেশি। নিহতদের বড় অংশই শিশু, নারী এবং নিরীহ বেসামরিক মানুষ।
দক্ষিণ গাজার নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, খান ইউনিসের বেনি সুহাইলা এলাকায় একটি ড্রোন হামলায় দুই ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের বয়স মাত্র ৮ ও ১১ বছর। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়াও শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় স্থল, নৌ ও বিমান হামলা চালায়। এসব হামলায় বহু পরিবার ধ্বংস হয়েছে, অনেকে এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
অপরদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করা সন্দেহভাজন তিন জনকে গুলি করেছে। দক্ষিণ গাজায় আরও একজন নিহত হওয়ার কথাও নিশ্চিত করেছে তারা।
হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। হামাস মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতি চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছে, যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিকভাবে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে।
কূটনৈতিক মহলের মতে, দীর্ঘমেয়াদী এই সংঘাতের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত একটি পরিকল্পনা এখনও আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন, অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ গঠন এবং ভবিষ্যতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তি তৈরির প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
গাজার পাশাপাশি উত্তেজনা বেড়েছে পশ্চিম তীরেও। ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার সেখানে আত্মসমর্পণের পরও দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। আরব টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, দুই ব্যক্তি হাত তুলে আত্মসমর্পণ করার পরও তাদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয়।
গাজায় সহিংসতার মাত্রা বাড়তে থাকায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং জরুরি মানবিক সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে।




