ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, একদিনে হাসপাতালে ভর্তি ৩১১ রোগী
ঢাকা ও রাজশাহীতে নতুন মৃত্যু, দেশে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ হাজারের বেশি রোগী


এবিএনএ: ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে দেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজন রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং দু’জন রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। একই সময়ে নতুন করে ৩১১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭ হাজার ৭৮২ জন। তাদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১১০ জন।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরিশাল বিভাগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি— ৯ হাজার ৩৭০ জন, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৩৩ শতাংশ। তবে মৃত্যুর দিক থেকে এগিয়ে ঢাকা মহানগর, যেখানে মৃত্যু হয়েছে ৬৩ জনের, যা মোট মৃত্যুর অর্ধেকেরও বেশি।
বয়সভিত্তিক হিসেবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। এ বয়সে আক্রান্ত ১০ হাজারেরও বেশি রোগী, যা মোট সংক্রমণের ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি। মৃত্যুও সবচেয়ে বেশি হয়েছে এই বয়সে— ৩১ জন।
গত একদিনে ভর্তি হওয়া নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকায় ১১২ জন, বরিশালে ৮২ জন, ঢাকা বিভাগের বাইরে ৪২ জন, চট্টগ্রামে ৩৭ জন, রাজশাহীতে ২১ জন, খুলনায় ১৫ জন এবং ময়মনসিংহে ২ জন। তবে রংপুর ও সিলেটে কোনো নতুন রোগী ভর্তি হয়নি।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ২৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাইরে ৮৫৩ জন এবং রাজধানীতে ৪৪০ জন।
মাসভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ১৬১ জন এবং মৃত্যু হয় ১০ জনের। ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ৩৭৪ জন, মৃত্যু ৩ জন। মার্চে আক্রান্ত ৩৩৬ জন হলেও কোনো মৃত্যু হয়নি। এপ্রিলে আক্রান্ত ৭০১ জন ও মৃত্যু ৭ জন। মে মাসে আক্রান্ত ১ হাজার ৭৭৩ জন ও মৃত্যু ৩ জন। জুনে আক্রান্ত ৫ হাজার ৯৫১ জন এবং মৃত্যু ১৯ জন। জুলাই মাসে আক্রান্ত সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৬৮৪ জন ও মৃত্যু ৪১ জন। চলতি আগস্টে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৮০২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের।
উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান সংরক্ষণ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয় ২০২৩ সালে, যখন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২১ হাজারের বেশি এবং মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। ২০২৪ সালেও আক্রান্ত হন ১ লাখের বেশি মানুষ এবং মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের।