বাংলাদেশে ন্যায়বিচারের নতুন দিগন্তের সূচনা করতে চাই: প্রধান বিচারপতির অঙ্গীকার
প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইন সহায়তার প্রসারে বিচার বিভাগের সংস্কারে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান


এবিএনএ: প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ শুধু রায় প্রদানে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং আইনের সঠিক প্রয়োগ ও মানবিকতা নিশ্চিত করবে—এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
মঙ্গলবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে লিগ্যাল এইডের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা এমন এক দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই, যাতে ভবিষ্যতে সবাই বলে—বাংলাদেশের বিচার বিভাগ শুধু রায় দেয়নি, প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছে।”
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি এই সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি কাজী জিনাত হক। আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা, আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সচিব এ এম জামিউল হক ফয়সাল।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা যে সংস্কারের পথে হাঁটছি, সেটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জপূর্ণ হলেও দেশজুড়ে বিচার বিভাগ এবং আইন পেশার সদস্যদের সাড়া দেখে আমি আশাবাদী। রাজধানীসহ সাতটি বিভাগে সফর করে আমি বিচার বিভাগের পরিবর্তনের বার্তা পৌঁছে দিয়েছি।”
তিনি আরও জানান, বিচার ব্যবস্থা উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোরও সমর্থন রয়েছে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও সুইডেন এই উদ্যোগে কেবল প্রযুক্তিগত নয়, নৈতিক সহায়তাও দিচ্ছে। এতে করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের পথে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
আইনি সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দিকেও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, “যারা দূর-দূরান্ত থেকে ন্যায়বিচারের আশায় আসে, তাদের জন্য আমাদের কার্যক্রম কেন্দ্রীভূত হওয়া উচিত।”
বিচারপ্রার্থীদের অভিযোগ দ্রুত গ্রহণ ও সমাধানে সুপ্রিম কোর্টের মতো অধস্তন আদালতগুলোতেও হেল্পলাইন চালু করার ঘোষণা দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “৬৪ জেলা ও ৮টি মেট্রোপলিটন এলাকায় এই হেল্পলাইন চালু হবে, যাতে মানুষ সরাসরি ও দ্রুত অভিযোগ জানাতে পারেন।”
এই দিনটি উপলক্ষে তিনি সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী, বিচারক, গণমাধ্যম এবং উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান—তারা যেন আরও মানবিক ও জনগণকেন্দ্রিক বিচার ব্যবস্থার জন্য নতুন করে প্রতিশ্রুতি নেন।
Share this content: