তথ্য প্রযুক্তি

২৯০ কোটি টাকা রক্ষায় বিটিসিএল নিয়ে দুদকের দারস্থ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী

ফাইবার নেটওয়ার্ক সংকট, অব্যবহৃত কোটি টাকা ও বাজার থেকে ছিটকে পড়ার ঝুঁকিতে বিটিসিএল—দুদকের সহযোগিতা চাইলেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

এবিএনএ:  বিটিসিএলের ফাইবার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্পে অনিয়ম ও ২৯০ কোটি টাকার সম্ভাব্য অপচয় ঠেকাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক ও টেলিযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বিটিসিএলের ফাইভজি প্রস্তুতি প্রকল্পে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি দুদক চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে সহযোগিতা চেয়েছেন।

ফয়েজ বলেন, “বিটিসিএল বর্তমানে যেই ফাইবার প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে, সেটি পূর্ববর্তী সরকারের আমলে নেওয়া হয় এবং সেই সময়েই টেন্ডার ও অফেরতযোগ্য এলসি প্রদান করা হয়। এতে ২৯০ কোটি টাকা পরিশোধ হয়েছে, অথচ প্রকল্পের অগ্রগতি হয়নি।”

তিনি জানান, বিটিসিএলের প্রতিযোগীরা ইতিমধ্যেই তাদের নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করে ফেলেছে, অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে পিছিয়ে আছে। এর ফলে বিটিসিএল দ্রুত বাজার থেকে ছিটকে পড়তে পারে।

বিশেষ সহকারী বলেন, “বর্তমানে দেশের ইন্টারনেট চাহিদা প্রতি বছর গড়ে ৪৫% হারে বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ২০০ টেরাবাইট ছাড়াবে। অথচ বিটিসিএলের বর্তমান সক্ষমতা জেলা পর্যায়ে মাত্র ১ জিবিপিএস। এমন গতিতে দেশের ডিজিটাল কাঠামো টিকবে না।”

তিনি অভিযোগ করেন, “বুয়েটের গবেষণা অনুযায়ী প্রকল্পে ভুল তথ্য ও প্রযুক্তিগত ঘাটতি ছিল। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় আসার আগেই এর এলসি পরিশোধ হয়ে গেছে। সঠিক ইকুইপমেন্ট না এলে টাকা ও সময় উভয়ই নষ্ট হবে।”

তৈয়্যব আরও বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেছি এবং একটি চিঠিতে বিস্তারিত যুক্তি উপস্থাপন করেছি। প্রস্তাব দিয়েছি, একটি নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে প্রকল্পের ইকুইপমেন্ট যাচাই করা হোক। যাতে টাকাও রক্ষা পায়, বিটিসিএলও টিকে থাকে।”

তিনি অভিযোগ করেন, এই প্রক্রিয়াকে ঘিরে তাকে ও তার দপ্তরকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

ফয়েজ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমাদের মন্ত্রণালয় এ প্রকল্পের কোনো দুর্নীতিতে জড়িত নয়। সব কার্যক্রমই হয়েছে আগের সরকারের সময়। আমরা শুধু প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও কার্যকর সমাধানের আহ্বান জানিয়েছি।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি প্রকল্পটি স্থগিত থাকে, তাহলে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনর্থক হয়ে যাবে এবং বিটিসিএলের বাজার হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button