এবিএনএ : দীর্ঘদিন ধরে চরম হুমকিতে আছেন এমন নির্দিষ্ট কয়েকজন বাংলাদেশী ব্লগারকে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার রাতে ঢাকায় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নাজিম উদ্দিন সামাদকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনার পর এই আভাস দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র মার্ক সি টোনার জানান, হুমকিতে থাকা বাংলাদেশী ব্লগারদের যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ের শুরুতেই বাংলাদেশে নাজিম হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলেন টোনার। তিনি বলেন, ব্রিফিংয়ের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু নিয়ে কথা বলব। আইনের ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদের হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে সহিংস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর সামাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত বাংলাদেশের জনগণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থন রয়েছ বলেও জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র।
তিনি বলেন, নাজিমুদ্দিন জানতেন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসও দেখিয়েছে যে, সহিংসতা বাংলাদেশের মুক্ত ও স্বাধীন মতকে হারাতে পারবে না। নির্মম হত্যাকাণ্ড বিরোধী বাংলাদেশী জনগণের পাশে আমরা আছি এবং বাকস্বাধীনতা রক্ষায় একটি সহনশীল ও অংশগ্রহণমূলক সমাজের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে। সন্ত্রাসবাদ,সহিংস জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহত সমর্থন জানাবে বলেও জানান তিনি। মার্ক টোনার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে টানা চরম হুমকিতে আছেন এমন নির্দিষ্ট কয়েকজন বাংলাদেশী ব্লগারকে মানবিক আশ্রয়ের বিষয়টি বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের আপত্তি আছে বলে জানান তিনি। সাধারণভাবে অনিবার্য জরুরি কারণে কোনো ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক আশ্রয় দেয়া হয়ে থাকে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে মানবিক আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি প্রশাসনিকভাবে দেখভালে দায়িত্বে থাকা নাগরিকত্ব ও অভিবাসন দফতরের প্রেস সচিব শিন ইনিওয়ি গোপনীয়তা আইনের কারণে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো মার্কিন সরকারের কাছে বাংলাদেশী লেখকদের মানবিক আশ্রয় প্রদানের আহ্বান জানিয়েছিল। নাজিমকে হত্যার পর মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাংলাদেশী ব্লগারদের আশ্রয় দিতে মার্কিন সরকারের কাছে ফের আবেদন জানায়।
বৃহস্পতিবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতিতে বলা হয়, নাজিমুদ্দিনকে নৃশংস উপায়ে হত্যার ঘটনা আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মানুষের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার রক্ষায় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হচ্ছে। কয়েক ডজন ব্লগার জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কিংবা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি বলে, ধর্মনিরপেক্ষ মতামত ও লেখালেখির কারণে ২০১৫ সালে কমপক্ষে চারজন ব্লগার ও একজন প্রকাশককে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে এখনো বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। পেন আমেরিকার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাজিম উদ্দিনের হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশ সরকারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা। এ ঘটনা মুক্তচিন্তার মানুষ যে ভীতিকর নিষ্ঠুর পরিস্থিতির মধ্যে আছে, সেটাই নির্দেশ করে। পেন আমেরিকার স্বাধীন মত প্রকাশ বিষয়ক কর্মসূচির পরিচালক কারিন কার্লেকার ঝুঁকিতে থাকা মুক্তচিন্তার মানুষদের আশ্রয় দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানান। প্রসঙ্গত, বুধবার রাত ৯টার দিকে সূত্রাপুর থানাধীন লক্ষ্মীবাজারের ঋষিকেশ দাস লেনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পরই বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে সমালোচনা ঝড় ওঠে।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.