জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

ঈদের ছুটি ছয় দিন করার পরিকল্পনা

এবিএনএ: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদের ছুটি ছয় দিন করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে ঈদে সরকারি কর্মচারীরা  তিন দিন ছুটি পান। এই ছুটি বাড়িয়ে ছয় দিন করার একটি প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পেলে প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। আসন্ন ঈদুল ফিতর থেকেই এটি কার্যকরের পরিকল্পনা করা হলেও ঈদুল আজহার তারিখকে মাথায় রেখে প্রস্তাবনা করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে এ বছরের ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে ঈদের দুই দিন আগে থেকে ঈদের দিন এবং ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত। যদিও এর মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটি ঈদের ছুটি হিসেবে কার্যকর হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সব ঠিক থাকলে এবার ঈদুল আজহা পালন হবে ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার। এ ছয় দিন সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ঈদের এ বাড়তি ছুটি কর্মচারীদের ঐচ্ছিক ছুটি থেকে কেটে নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ঈদে ছুটি বাড়ানোর একটি প্রস্তাব সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে নীতিগত সিদ্ধান্ত আসার পরই এটি সর্বোচ্চ ফোরামে উপস্থাপন করা হবে। এখানে অনুমোদন পেলে ছুটির আদেশ জারি হবে। না হলে বিদ্যমান নিয়মে ছুটি থাকবে।
তিনি বলেন, সরকার ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে বছরের নির্ধারিত ছুটি ঠিকই থাকবে। বাড়তি ছুটি কর্মচারীদের ঐচ্ছিক ছুটি থেকে কেটে নেওয়া হবে। অর্থাৎ শুধু ঐচ্ছিক ছুটির সঙ্গে ঈদের ছুটির সমন্বয় করা হবে। ঈদের দিন ও তার আগের দিন পড়ছে সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে বিদ্যমান নিয়মে এবার তিন দিন ঈদের ছুটি থাকলেও এর দুই দিনেই পড়ছে সাপ্তাহিক ছুটি। বাড়তি কোনো ছুটি পাচ্ছেন না সরকারি চাকরিজীবীরা। চাকরিজীবীরা বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা হবেন। আবার সোমবার অফিস খোলা থাকায় ঈদের পরের দিন রোববার ঢাকামুখী হবেন। এতে একসঙ্গে রাস্তাঘাটা, ফেরি, লঞ্চ, রেলের ওপর চাপ বাড়বে। মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না। এমনকি গ্রামের সড়কও বেহাল। তারপর এত চাপ মোকাবিলা করা প্রশাসনের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। ফলে চাকরিজীবীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি পোঁছাতে ঈদের ছুটি বাড়ানো হচ্ছে।
জানা গেছে, ঈদে ছুটি বাড়ানোর দাবি সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের। ২০১০ সালে ঈদুল ফিতরে সরকারি ছুটি তিন দিনের পরিবর্তে পাঁচ দিন করার একটি প্রস্তাব দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এটি নাকচ হয়ে যায়। গত ঈদুল ফিতরের ছুটিও ছয় দিন করার একটি প্রস্তাব তৈরি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এতে সম্মতি দেন। কিন্তু ওই সময় সংসদে বাজেট অধিবেশন থাকায় ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাব আর কার্যকর হয়নি। এবার সরকারি কর্মচারীদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে এবং ঈদে যাতে ঘরমুখো মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন এজন্য ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে বছরে অফিস-আদালত ১৫৯ দিন বন্ধ থাকে। এর মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটি থাকে ১০৪ দিন। অন্যান্য ছুটি থাকে ৫৫ দিন।

রাইজিংবিডি

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button