এবিএনএ : গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংস্থা ওআইসি চুপ থাকতে পারে না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ওআইসিকে আরও জোরালো ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটিকে আরও সোচ্চার হওয়ার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দুই দিনব্যাপী ৪৫তম সম্মেলনের উদ্বোধনকালে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সম্মেলন শুরু হয়। ওআইসির সদস্যভুক্ত ৫৭টি দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘টেকসই শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নে ইসলামিক মূল্যবোধ।’ জাতিগত সংঘাতের জেরে গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এতে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নিতে থাকে। গত কয়েক মাসে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানবতার পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন আমাদের প্রিয়নবী। সুতরাং নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে ওআইসি চুপ থাকতে পারে না।’ এ সময় ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারেও ওআইসির আরও জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১১ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ব্যথায় ব্যথিত। কারণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আমার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ছয় বছর আমি ও আমার ছোট বোনকে রিফিউজি হয়ে থাকতে হয়েছে। এজন্য আমরা জানি এই কষ্ট।’ এছাড়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশের এক কোটি মানুষ পাশের দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল বলে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। বলেন, এজন্যই আমরা শরণার্থীদের সমস্যাটা বুঝি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই দেখলাম রোহিঙ্গারা নিপীড়িত আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ওআইসিকেও অনুরোধ করবো আপনারাও তাদের পাশে দাঁড়ান।’ ওআইসিকে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
‘চরমপন্থার সঙ্গে মুসলিমদের গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ সহিংসতা ও চরমপন্থার সঙ্গে মুসলমানদের গুলিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা চলতে দেয়া যায় না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। মুষ্টিমেয় লোকের জন্য ইসলামের বদনাম হোক এটা আমরা কেউই চাই না।’ এ সময় তিনি মুসলিমদের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনা এবং ভবিষ্যৎ ঢেলে সাজানোর তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসে সবার আস্থাশীল হওয়া, ক্ষুদ্র স্বার্থে ধর্মকে বিভাজন না করা, নিজেদের সমস্যা নিজেদের সমাধান করার প্রতি তাগিদ দেন শেখ হাসিনা। সমঝোতা ও শান্তির বার্তা বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উন্নয়নে পথে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার চিত্রও তুলে ধরেন। বলেন, আমরা ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি। শিক্ষা, স্বাস্থ ও সন্ত্রাস নির্মূলে বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়-এই নীতিতে বিশ্বাস করতেন বঙ্গবন্ধু। অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোকেও এই নীতি অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি। ইসলামি বিশ্বে যে মতবিরোধ তা আলোচনার মাধ্যমেই নিরসন করা যায় বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। মুসলিম বিশ্বের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও সংঘাত নিরসনে ওআইসিকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.