আমেরিকালিড নিউজ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসো-কোর্টেজ!

এবিএনএ: সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় উদারপন্থীদের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র সত্যিকার অর্থে একজন নারী প্রেসিডেন্ট পেতে প্রস্তুত আছে কিনা! পরে দেশটির বিভিন্ন নারী রাজনীতিবিদ ও সেলিব্রেটিদের নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। যেমন সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, সিনেটর কামালা হারিস, অপরাহ, মিশেল ওবামা ও তুলসি গ্যাবার্ড। হিলারি ক্লিনটন ফের প্রার্থী হবেন বলেও গুজব রয়েছে। এসব নারীর কেউ শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউসে জায়গা করে নিতে পারেননি। তবে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিনিধি পরিষদের সবচেয়ে কম বয়সী সদস্য আলেক্সান্দ্রিয়া অকাসো-কোর্টেজের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন। পুয়ের্তোরিকান বংশোদ্ভূত আলেক্সান্দ্রিয়ার উত্থান ঘটে আকস্মিকভাবেই। এক বছরেরও কম সময় আগে তিনি কাজ করতেন একটি বারের বারটেন্ডার হিসেবে। সেই চাকরি ছেড়ে ২০১৮ সালে পুরোদস্তুর রাজনীতিতে নামেন তিনি। গত বছরের জুনে ৫৭ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট পেয়ে নিউইয়র্ক কংগ্রেশনাল প্রাথমিকে অভিজ্ঞ জো ক্রাউলিকে হারিয়ে দেন। পরে নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি। তখন তার বয়স মাত্র ২৯ বছর।

২০১৬ সালের নির্বাচনে জনপ্রিয়তার ভোটে জয়ী হন হিলারি ক্লিনটন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে তিনি হেরে যান। জটিল ও যুক্তিযুক্তভাবে বলা যেতে পারে, অন্যায্য ইলেক্টরাল কলেজব্যবস্থায় তিনি প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে পারেননি। কেবল ইলেক্টরাল কলেজ সিস্টেমের অন্যায্যতার প্রতি আঙুল তুলেই মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক হতাশার কথা ব্যক্ত করতে পারি না। কারণ এ ব্যবস্থার ভেতর দিয়ে বহু ডেমোক্র্যাট সদস্য বিরোধীদের হারাতে সক্ষম হয়েছেন। তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ ছিলেন। হিলারি হেরে গেছেন। কারণ তিনি দেশের শ্রমজীবী মানুষের মন জয় করতে পারেননি। অথচ তাদের দুঃখ, কষ্ট ও বেদনা হিলারির বোঝা উচিত ছিল। আগামী ২০২০ সালের নির্বাচনে আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রার্থী হওয়া একেবারে অসম্ভব। কারণ তখন সাংবিধানিক চাহিদা অনুসারে তার বয়স ৩৫ হবে না।

ডেমোক্র্যাট পার্টি সম্ভবত সাবেক টেক্সাস কংগ্রেস সদস্য বেটো ও’রোকের মতো কাউকে মনোনয়ন দেবে। কারণ তিনি ঐতিহ্যবাহী মধ্য-বামের আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন। অর্থাৎ ‘আপস’, ‘আপস’, ‘আপস’। যদি সেটিই হয়, তবে ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারে তাকে কোণঠাসা করে ফেলতে পারবেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি ফের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন।

এদিকে ওয়াশিংটনের রাজনীতি কীভাবে কাজ করে, তা বোঝাতেই আগামী পাঁচ বছর কেটে যাবে আলেক্সান্দ্রিয়ার। এ সময় নিজের অভিজ্ঞতা তিনি বাড়াবেন এবং প্রতিনিধি পরিষদের একজন সদস্য হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন। এর মধ্যে নিজ দল ডেমোক্র্যাট পার্টিতেও অনেক মিত্র তৈরি করতে হবে তাকে। কংগ্রেস সদস্য হিসেবে দুই বছর কাটানোর পর তিনি সম্ভবত নিজ শহর নিউইয়র্ক থেকে সিনেট সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবেন। ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার আগে নিজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে আরও বাড়াতে পারবেন তিনি। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে ২০১৪ সালে দলের মনোনয়ন পেতে তাকে এসব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। তার ব্যাপারে আরেকটু বাড়িয়ে বলা যায়- একজন নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে টিকিট পাওয়ার জন্যও তিনি লড়তে পারেন। তিনি যদি এভাবে ওয়াশিংটনের রাজনীতিতে টিকে যেতে পারেন, তবে আর এক মেয়াদ পরেই প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী কোনো নারী হবেন তিনি।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button