এবিএনএ : বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে বড় ব্যবসায়ীদেরকে দুই জায়গায় ঘুষ দিতে হতো বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অভিযোগ করেন, এই ঘুষের একটি অংশ যেতো প্রধানমন্ত্রীর জন্য এবং আরেকটি যেতো তার ছেলে তারেক রহমানের জন্য। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাগের টাকা যেত বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালুর কাছে আর তারেক রহমানের ভাগ যেতো তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের কাছে।
এই সম্মেলনে নারী তথা দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের নেয়া নানা প্রকল্পের বর্ণনা দিয়ে জনগণের কাছে এগুলো তুলে ধরতে দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ প্রধান। স্মরণ করিয়ে দেন বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তারা কী করেছে।
দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাস লুটপাট-বিএনপির রাজনীতির বৈশিষ্ট্য মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির জন্য তখন খোলা হয় হাওয়া ভবন, আর গাজীপুরের খোয়াব ভবন। হাওয়া ভবনে পাওনা না দিয়ে তখন কেউ ব্যবসা করতে পারতো না। প্রাইম মিনিস্টার অফিসেও তখন উন্নয়ন উইং বানিয়ে দুর্নীতি হয়।’
ঘুষের টাকা তখন দুই জায়গায় যেত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাও তাকে আবার এক দফায় দিলে হয় না। মায়ের ভাগ দিতে হবে, পুত্রের ভাগ দিতে হবে। মায়ের ভাগ যাবে ফালুর কাছে, পুত্রের ভাগ যাবে মামুনের কাছে। এই ছিল সিস্টেম, ব্যবস্থা।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দুর্নীতি করে গেছে, দেশের কোনো উন্নয়ন করেনি। বরং ৯৬ থেকে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ দেশের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে, কিছুটা উন্নতি পেয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রশাসন, শিক্ষাঙ্গন, আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীতে নারীদের নিয়োগের উদ্যোগ নেয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, উচ্চপদে যখন নারীর নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন তিনি তখন অনেক বাধা এসেছে। অথচ আজ নারীরা সবচেয়ে বেশি সফল।
আওয়ামী লীগ যে কাজ করছে, সেগুলো ব্যাপকভাবে সমগ্র বাংলাদেশে প্রচার করার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের কাছে যেতে হবে, তাদের কাছে কথাগুলো তুলে ধরতে হবে, কেন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দরকার সেটা বোঝাতে হবে। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ কিছু পায়। আর বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় ছিল, লুটপাট করে তারা নিজেরা ভোগ করেছে অথবা মানি লন্ডারিং করেছে অথবা এতিমের টাকা মেরে খেয়েছে অথবা নিজেরা বিলাসবসনে জীবন যাপন করেছে।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি সরকার ব্যাপকভাবে প্রচার করেছিল তখন জিয়া তার উত্তরসূরীদের জন্য ছেড়া গেঞ্জি আর ভাঙা স্যুটকেস ছাড়া কিছু রেখে যেতে পারেননি। এর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছেড়া গেঞ্জি হয়ে গেছে ফ্রেঞ্চ শিফন, আর ভাঙা স্যুটকেস হয়ে গেছে জাদুর বাক্স। সেখান থেকে কোনো ওয়ান, কোনো টু থেকে শুরু করে অনেকগুলো ইন্ডাস্ট্রিজ বেরিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মরে যাওয়ার পরে বললো, জিয়া কিছুই থুয়ে যায়নি, ভাঙা স্যুটকেস আর ছেড়া গেঞ্জি ছাড়া। জিয়া যেন গেঞ্জি পরেই ঘুরে বেড়াত, আর ছেড়া গেঞ্জিই পড়তো। আমি জানি না, ওপরে এত দামি দামি স্যুটের ভেতরে ছেড়া গেঞ্জি পড়তো কি না। কিন্তু আপনারা যে তার নামে মিউজিয়াম বানিয়েছেন চট্টগ্রামে, সেখানে যদি দেখেন ভাঙা স্যুটকেস নেই, ভালো স্যুটকেসই আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়ার মৃত্যুর পর ৪০টা দিন পর্যন্ত বিটিভিতে আমাদেরকে এই ছবিই দেখতে হয়েছে, দামি বেডকভারের ওপর ছেড়া গেঞ্জির ছবি, আর ওদিকে ভাঙা স্যুটকেস। প্যান্ট কেটে কেটে নাকি কোকো-তারেককে প্যান্ট বানিয়ে দিত, প্যান্ট কেনারও ক্ষমতা ছিল না। খালেদা জিয়ার হাতে রেশনের সামান্য কিছু টাকা, তাই দিয়ে রেশন এনে ওই খাবারই খেতো। তারপর কিন্তু আমরা কী দেখলাম, তিনি যখন বাড়ি বদলালেন তখন বাড়ির চেহারা, ফার্নিচার ইতালিয়ান ব্র্যান্ডের ফার্নিচার থেকে শুরু করে অনেক কিছুই।’
আওয়ামী লীগকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সে কাজে সফল হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমি, আমার পরিবারকে দুর্নীতিবাজ দেখানোর জন্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মত প্রতিষ্ঠানও অভিযোগ এনেছে। চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। তারা প্রমাণ করতে পারেনি। এটা যে সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট এবং মিথ্যা অপবাদ, সেটা তো কানাডা কোর্টই প্রমাণ করে দিয়েছে।’
‘কত পেয়ার দিল মে থা’
মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনানিবাসে থাকাকালে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা জানজুয়ার মৃত্যুতে খালেদা জিয়ার শোকবাণী পাঠানোরও সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তখন বাংলাদেশের খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দিলে তো ছিল পেয়ারে পাকিস্তান। একজন আর্মি অফিসার মারা গেছেন, বাংলাদেশের প্রাইম মিনিস্টার কনডোলেন্স পাঠালেন। কত পেয়ার দিল মে থা, একটু সোচ দিজিয়ে ভাই, একটু চিন্তা করেন।’
বর্তমান সরকারের আমলে বেশ কিছু নির্বাচন নিয়ে বিএনপি প্রশ্ন তোলায় তাদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে বেশ কিছু নির্বাচনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘এ দেশে কবে কখন বিএনপি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পেরেছে? …তাদের ইতিহাসে তা নাই। তাদের ইতিহাসে আছে ভোট কারচুপি, অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো, ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা অথবা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে ভোটের রেজাল্ট পাল্টে ফেলা।’
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.