ফিচার

বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলা- ৫: রুমাল চুরি

এ বি এন এ : প্রতিটি দেশের নিজস্ব সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ খেলা। বাংলাদেশে প্রচলিত বহু গ্রামীণ-লোকজ খেলা রয়েছে। কিন্তু নগরায়ন, প্রযুক্তির প্রসারের ফলে সেগুলো থেকে ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম। শহরের শিশুরা অভ্যস্ত হচ্ছে কম্পিউটার, ট্যাব, মোবাইলে খেলায়। কৃত্রিম পার্কও তাদের অন্যতম গন্তব্য।

অথচ গ্রামের শিশুরা ছোটবেলা থেকেই বাড়ির এক চিলতে উঠোন বা খোলা মাঠে তেমন কোনো উপকরণ ছাড়াই মেতে ওঠে গোল্লাছুট, নাটবল্টু, বউচির মতো বিভিন্ন মজার গ্রামীণ খেলায়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসব খেলার প্রচুরতা আগের তুলনায় বেশ কম। বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলার পঞ্চম পর্বে থাকছে রুমালচুরি-

রুমাল চুরি
খেলার উপকরণ একটি রুমাল। ছোট্ট এক টুকরো কাপড় হলেও চলে। আট-দশজনের বড় দল হলে খেলতে মজা হয়।
খেলোয়াড়রা সবাই গোল হয়ে দাঁড়িয়ে হাত তুলবে। হাত তোলার সময় হাতের তালু বা পাতা যেকোনো একটি উপরের দিকে রাখতে হবে। যদি হাতের তালুর সংখ্যা বেশি থাকে, আর হাতের পাতার সংখ্যা কম থাকে, তাহলে যাদের যাদের সংখ্যা কম তারা একে একে সরে যাবে। এভাবে শেষ পর্যন্ত যে থাকবে, সে হবে চোর। কিন্তু শেষবারে যদি দু’জন থাকে। আর হাতের একই দিক দেখায়, তাহলে যারা একে একে সরে গেছে তাদের মধ্যে থেকে একজন এসে আবার হাত পাতবে। তিনজনের মধ্য থেকে একজন চোর নির্বাচিত হবে। এবার খেলা শুরু।

চোর বাদে দলের সবাই গোল হয়ে বসবে। চোর সবার পেছন দিয়ে রুমাল নিয়ে ঘুরতে থাকবে। ঘুরতে ঘুরতে এক সুযোগে রুমালটি গোল হয়ে বসা কোনো এক খোলোয়াড়ের পেছনে রেখে দেবে। চোর এরপর একবার ঘুরে আসার পর যার পেছনে রুমাল লুকিয়ে রাখা হয়েছে, সে যদি টের না পায়, তাহলে চোর তাকে কিল মারতে থাকবে। তখন সে-ই হবে নতুন চোর। আর পুরোনো চোর বসে পড়বে নতুন চোরের স্থানে। এভাবে পুনরায় খেলা শুরু হবে।
উল্লেখ্য, যদি রুমাল কারও পেছনে রেখে চোর ঘুরে আসার আগেই সে টের পেয়ে যায়, তবে রুমাল হাতে নিয়ে সে হবে নতুন চোর। আগের চোর খালি জায়গায় বসে পড়বে। এখানে আর নতুন চোরকে কিল দেবে না পুরনো চোর!

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button