

এবিএনএ : সিলেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে দুবাই প্রবাসী এক যুবক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ওই যুবক গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দেশে এসেছেন। বুধবার রাত ১১টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে নিয়ে যান স্বজনরা। পরে সেখানে করোনাভাইরাসের সন্দেহ হলে তাকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। করোনাভাইরাসে শনাক্ত করার কোনো পরীক্ষা সিলেটে না থাকায় তার রক্তের স্যাম্পল ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) টিম সিলেটে এসে ওই যুবকের রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেছেন। রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সব তথ্য নিশ্চিত সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আরএমও ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, প্রবাসী ওই যুবক জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন। করোনা ছাড়াও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন ইনফেকশনে এরকম থাকে। ওই যুবক পাঁচদিন আগে দুবাই থেকে দেশে ফিরেছেন, তাই এ সব লক্ষণে করোনা সন্দেহ সাসপেক্টেট ইস্যুতে ভর্তি রাখা হয়েছে। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে দু’দিন সময় লাগবে। তিনি বলেন, চিকিৎসার দেয়ার পর শ্বাসকষ্ট কিছুটা কমছে। তবে এখনও আছে। ওসমানী হাসপাতালের মেডিকেল টিমও রয়েছে ওই যুবকের চিকিৎসার জন্য। সেনসিটিভ ইস্যু হওয়ায় হাসপাতালে আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। রোগীদের মধ্যে কোনো ধরনের আতঙ্ক নেই। রোগী কমেনি বরং আমরা কম রোগী ভর্তি করছি।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বুধবার রাতে দুবাই ফেরত প্রবাসী যুবক জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও মাথা ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। প্রবাসী হওয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সম্ভাবনা রয়েছে এমন সন্দেহ থেকে তাকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি ঢাকায় না গিয়ে নগরীর একটি বাসায় অবস্থান করেন। পরে রাত ১১টায় সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে দেখেন। তখন তার কাছ থেকে সমস্যাগুলো শুনেন। যেগুলো করোনাভাইরাসের আক্রান্ত রোগীর সবগুলো লক্ষণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তখন ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসকরাও তাকে ঢাকায় যেতে বলেন। কিন্তু সে ঢাকায় যেতে না চাওয়ায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে কোয়ারেন্টাইনের জন্য তাকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ দিকে শামসুদ্দিন হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে রোগী ভর্তির খবর পেয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছে আনসার সদস্যরা। বুধবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে অন্যান্য চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন ব্যতীত কাউকে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল। বুধবার রাতে তিনি বলেন, তার জ্বর এবং বিদেশ ফেরত হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাই তাকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।