এবিএনএ: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আটটি খাতে মোটা অংকের দুর্নীতি হয় বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান। রোববার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিশনার।
এ সময় মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘সরকারি সেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতি, দীর্ঘসূত্রিতা এবং জনহয়রানি বন্ধে দুর্নীতি কমিশন গঠিত টিম এ প্রতিবেদন তৈরি করে।’তিনি বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানিক টিম আটটি দুর্নীতির উৎস খুঁজে পেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- বিমান ক্রয় ও বিমান লিজ খাতে দুর্নীতি, রক্ষণাবেক্ষণ ও ওভারহোলিং খাতে দুর্নীতি, গ্রাউন্ড সার্ভিস খাতে দুর্নীতি, কার্গো আমদানি রফতানি খাতে দুর্নীতি, বিমান ফুড ক্যাটারিং খাতে দুর্নীতি ইত্যাদি।’ এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন ৮ দফা সুপারিশ পেশ করেছেন বলেও জানান তিনি।
মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘কমিশন ২০১৭ সালে ২৫টি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করে। প্রতিটি টিমকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান আইন, বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ অপচয়ের দিকসমূহ ও বিশ্লেষণ করে এসব প্রতিষ্ঠানের জনসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সফলতা ও সীমাবদ্ধতা, আইনি জটিলতা, সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি ও দুর্নীতির কারণসমূহ চিহ্নিত করে তা বন্ধে সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশনে প্রস্তাব পেশ করতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার আলোকে ২০১৮ সালে কাস্টমস, ভ্যাট অ্যান্ড এক্সাইজ ও আয়কর বিভাগ এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর সংশ্লিষ্ট টিমসমূহ এসব ক্ষেত্রে দুর্নীতির উৎসমূহ চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে সুপারিশমালা প্রণয়ন পূর্বক কমিশনে প্রতিবেদন পেশ করে। কমিশন আলোচনা-পর্যালোচনা করে বাস্তবসম্মত কয়েকটি সুপারিশ সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে।’
কমিশন বিশ্বাস করে এসব সুপারিশ বাস্তবায়নযোগ্য, যা অবশ্যই এসব দফতরে সরকারি পরিষেবা প্রদানে ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস করতে পারে। অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক টিমের প্রতিবেদন কমিশনের বিচার-বিশ্লেষণ পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিভিল এভিয়েশন অথরিটির ১১ খাতে দুর্নীতি
সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের ১১টি খাতে দুর্নীতি হয়েছে বলে জানান দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান। তিনি বলেন, ‘সরকারি সেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতি, দীর্ঘসূত্রিতা এবং জনহয়রানি বন্ধে দুর্নীতি কমিশন গঠিত প্রাতিষ্ঠানিক টিম এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক টিম ১১টি দুর্নীতির উৎস খুঁজে পেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- ক্রয় খাতে দুর্নীতি, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি, নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতি, বিমানবন্দরের স্পেস/স্টল ও বিলবোর্ড ভাড়ায় দুর্নীতি, কনসালটেন্ট নিয়োগে দুর্নীতি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে দুর্নীতি ইত্যাদি।
মোজাম্মেল হক বলেন, কেনাকাটার খাতেই বেশি দুর্নীতি হয়। তাই কেনাকাটার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ লোকজন নিয়োগ দেয়ারও সুপারিশ করে তারা।’ প্রয়োজনের এক্ষেত্রে বুয়েটের অভিজ্ঞ শিক্ষদের কাজে লাগানো যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে দুর্নীতিকে বিদায় জানাতে হবে। সরকারও এবার ক্ষমতা নেয়ার সময় দুর্নীতিকে বিদায় জানাতে চেয়েছে। কাজেই দুর্নীতি দমনের বিষয়টি এখন অগ্রাধিকারে রয়েছে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘দুদকের রিপোর্ট আমরা খতিয়ে দেখবো। দুদক যেসব সুপারিশ দিয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে কি কি পদক্ষেপ নেয়া যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেব।
যাত্রীদের সেবা দেয় না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
যাত্রীদের ভালো মানের খাদ্য ও সেবা দেয় না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এমনি অভিযোগ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।যাত্রীদের যে মানের খাদ্য ও পরিষেবা দেয়ার কথা বিমান বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তাতে ঘাটতি রয়েছে। যে মানের সেবা পাওয়ার কথা সেটা যাত্রীরা পায় না বলেও জানান ড. মো. মোজাম্মেল হক খান। দুদক কমিশনার বলেন, ‘গ্রাউন্ড সার্ভিসের অবস্থা ভালো না। বিমানে টিকিটের জন্য যাওয়া হলে বলা হয় টিকিট নেই। কিন্তু পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ চাইলেই আবার টিকিট পাওয়া যায়। এসব অসঙ্গতিসহ বিমান পরিচালনার ক্ষেত্রে এ ধরনের নানাবিধ অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগগুলোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে যদি মনিটর করা হয়। তাহলে নিঃসন্দেহে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক দেশে গিয়ে দেখেছি টার্মিনাল ঘুরে লাগেজের নিকট যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে মালপত্র চলে আসে। কিন্তু নিজের দেশে লাগেজের জন্য আমাদের এক দেড় ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এসব আমরা চায় না। এক্ষেত্রে নজরদারি বাড়াতে হবে।’ ‘তাছাড়া ট্রেনিং নেয়ার জন্য সিভিল এভিয়েশনে অল্প সময়ের জন্য বদলি হয়। এমন অভিযোগও দুদকের কাছে রয়েছে।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বর্তমানে আগের চেয়ে বিমানের সেবা কিছুটা বেড়েছে। তবে আমরা এটাকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে চায়। তাহলে দেশের সুনাম বাড়বে। বিদেশে দেশের ভাবমুর্তি বাড়বে। আমি আশা করি রিপোর্টটি মন্ত্রণালয় গুরুত্বসহকারে দেখবেন তাতলেই বেশকিছু সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরে অনেক ধরনের সুন্দর সুন্দর ইকুইপ থাকে। ওই দেশে নামলেই সে দেশটার একটা প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এতে ঘাটতি রয়েছে। আমরা মনে করি এ কাজগুলো সঠিকভাবে হওয়া উচিত। এ বিষয়ে মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই বিমানে যাত্রীদের সেবা প্রদানে মান ও দ্রুত লাগেজ প্রদানের জন্য কাজ শুরু করেছি। বিমানে টিকিট বিক্রি না করার সঙ্গে কারা জড়িত সে বিষয়েও আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। বিমানের ভাবমুর্তি নষ্টের সঙ্গে যারাই জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.