জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

নতুন এনআইডি স্মার্ট কার্ডের জন্য লাগবে চোখের মণির ছবি দিতে হবে পাঞ্জার ছাপ

এবিএনএ : এবার উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) স্মার্টকার্ড পাওয়ার জন্য দেশের প্রায় ১০ কোটি ভোটারকে নতুন করে আঙুলের ছাপ দিতে হবে। একাজে শুধু বৃদ্ধা আঙুল ও তর্জনীর ছাপ দিলেই হবে না— দুই হাতের ১০ আঙুলের ছাপ দিতে হবে। এছাড়া আইরিশ বা চোখের মণি বা কনীনিকার ছবিও দিতে হবে। বর্তমানে আঙুলের ছাপ দিয়ে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধন করতে হচ্ছে নাগরিকদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানান, স্মার্টকার্ড ছাপানোর কাজ চলছে। এটি যখন বিতরণ শুরু হবে তখন নাগরিকদের দশ আঙুলের ছাপ ও চক্ষুর কনীনিকার ছবি দিয়ে তা সংগ্রহ করতে হবে। কারণ এনআইডির তথ্যভাণ্ডারে নাগরিকদের হাতের বৃদ্ধাঙুল ও তর্জনীর ছাপ রয়েছে। আগামীতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, এজন্য নতুন করে প্রত্যেক ভোটারের দুই হাতের দশ আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহউদ্দিনও একই পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ হচ্ছে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত। ওই সময়ের মধ্যেই স্মার্টকার্ড ছাপা ও বিতরণ শেষ করতে হবে। গত অক্টোবর মাস থেকে ১০টি মেশিনে এনআইডির স্মার্টকার্ড ছাপানোর কাজ চলছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০ লাখ কার্ড ছাপানোর ক্ষমতা রয়েছে এসব মেশিনের। পর্যাপ্ত পরিমাণ কার্ড ছাপানোর আগে বিতরণ শুরু করা ঠিক হবে না। কারণ, কোন্ এলাকার নাগরিকরা এ কার্ড পেল আবার কোন্ এলাকার নাগরিকরা পেলো না —এ নিয়ে গণ্ডগোল হতে পারে।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০-এ বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়ের জন্য একজন নাগরিকের বায়োমেট্রিক্স ফিচার— যথা আঙুলের ছাপ, হাতের ছাপ, তালুর ছাপ, আইরিশ বা চোখের কনীনিকা, মুখাবয়াব, ডিএনএ, স্বাক্ষর ও কণ্ঠস্বর সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু এ কাজের অনেকটাই বাকি রয়েছে। স্মার্টকার্ড বিতরণ ও প্রস্তুত করতে ফরাসি কোম্পানি অবারথু টেকনোলজির সঙ্গে চুক্তি করেছে নির্বাচন কমিশন। কোম্পানিটি ২০১৭ সালের জুনের মধ্যেই ১০ কোটি ভোটারের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেবে। এতে ৭৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে।

পাল্টে গেছে অনেকের তথ্য
আট বছর আগে দেশের আট কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮ জন নাগরিক প্রথমবারের মত ছবিসহ ভোটার হন। তাদের ব্যক্তিগত অনেক তথ্যই এ আট বছরে পাল্টে গেছে। বিশেষ করে সে সময়ের তরুণ ভোটারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, বৈবাহিক অবস্থা, পেশা— এসব তথ্য স্বাভাবিকভাবেই পাল্টে যাওয়ার কথা। অনেকের বাবা-মায়ের মৃত্যু হয়েছে, ঠিকানা বদল হয়েছে। কিন্তু এতদিন এসব তথ্য হালনাগাদ করার সুযোগ কেউ পাননি। ২০০৮ সালে ভোটার তালিকা তৈরি ও ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার কাজ শুরুর পর কিছু দিন ঢাকার কয়েকটি এলাকায় অনলাইনে এবিষয়ে সব তথ্য দেখার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। ঘোষণা দেয়া হয়েছিল সারা দেশে পর্যায়ক্রমে এ সুযোগ দেয়া হবে এবং তথ্যে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধনের সুযোগ পাওয়া যাবে। কিন্তু কয়েকদিন এ সুযোগ বহাল রেখে ভোটার বা জাতীয় পরিচয় ডেটাবেইসের নিরাপত্তাগত কারণ দেখিয়ে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। ত্রুটিপূর্ণ এ অবস্থার মধ্যেই বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় দেশে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হচ্ছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button