রাজনীতি

ড. ইউনূস নির্বাচন না চেয়ে ক্ষমতায় থাকার পথ খুঁজছেন: এম এ আজিজের বিস্ফোরক মন্তব্য

“সব দল সংস্কারে সম্মত, তবু তিনি একপেশে বক্তব্য দিচ্ছেন”—টক শোতে বললেন সাংবাদিক এম এ আজিজ

এবিএনএ:

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট এম এ আজিজ বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস মূলত ক্ষমতা ছাড়তে রাজি নন, বরং নির্বাচনী সংস্কারের আড়ালে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে চান।

সোমবার এক বেসরকারি টেলিভিশনের আলোচিত টক শোতে অংশ নিয়ে এম এ আজিজ এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে নতুন সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করতেই পারে। কিন্তু ড. ইউনূস একদলীয় অবস্থানে থেকে শুধুমাত্র সেই দলগুলোর কথা বলছেন যারা আগে থেকেই নির্বাচনের পক্ষে। অথচ ৩০টি দলের মধ্যে ২৯টি দলই ডিসেম্বরের নির্বাচন মেনে নিয়েছে। এমনকি জামায়াতও জানিয়েছে, রোজার আগে বা পরে হলেও ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে আপত্তি নেই। তাহলে আপত্তি কার? কেবলমাত্র এনসিপির। আর এই এনসিপি হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার অনুসারী একটি সংগঠন।”

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে উপস্থাপক প্রশ্ন করলে এম এ আজিজ বলেন, “জাতিসংঘ আগে নির্বাচনকে সকল দলের অংশগ্রহণ বোঝাতে চাইত। কিন্তু এবার তারা সরাসরি জনগণের অংশগ্রহণের কথা বলছে, কারণ একটি বড় রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে এবং নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। সুতরাং তারা ভোটের আগে ভোটের পরিবেশ তৈরি হোক—এই বার্তা দিচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ভোটের বিষয়ে জনগণ নয়, সিদ্ধান্ত নেয় রাজনৈতিক দলগুলো। সংবিধানেও তাই লেখা আছে।”

টক শোতে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবীবাও উপস্থিত ছিলেন।

এম এ আজিজ আরও বলেন, “ড. ইউনূস কেবল বক্তৃতা দেন, প্রশ্ন করলে উত্তর দেন না। মূল সমস্যা এখানেই। বিএনপি দেশের একটি বড় দল, এই দল সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যে বোঝা যায়, তিনি আপসের পথে আগ্রহী নন। অথচ তিনি নিজেই বলেছিলেন, যেসব বিষয়ে সব দল একমত, সেসব সংস্কার করেই নির্বাচন হবে। এমনকি কোনো সংস্কার ছাড়াও নির্বাচনে যাওয়া হবে। তাহলে এখন পিছিয়ে যাওয়ার অর্থ কী?”

তিনি আরও যোগ করেন, “ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন হলে এখনো প্রায় ৭-৮ মাস সময় আছে। তবু সেই সময়টাতেও নির্বাচন আয়োজন করতে না চাওয়া এক ধরনের অস্বাভাবিকতা। যেখানে অতীতে কেয়ারটেকার সরকারের সময় মাত্র তিন মাসেই নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে।”

বিএনপির প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে এম এ আজিজ বলেন, “বিএনপি যদি এখনই নির্বাচনে আসে, তবে তারা সরকার গঠন করতে পারে। কিন্তু ড. ইউনূস বলেছেন, একটি পরাজিত দলের সঙ্গে পরামর্শ করে কিংবা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সরকার গঠনের পথ রুদ্ধ করা হলে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই বক্তব্যের মানে কী?”

এই আলোচনায় উপস্থিত থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গেও এম এ আজিজের বিতর্ক হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এই টক শো “দেশ সাম্প্রতিক”-এ আলোচনার মাধ্যমে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি হয়েছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button