এবিএনএ : যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন হয়েছে জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের দাফন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৫৫মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিলো ৮৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে সংক্রমণসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। পরে জানা যায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এ কারণে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও জানাজার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয় তার পরিবার।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে সিএমএইচ থেকে তার মৃতদেহ গ্রহণ করে আল মারকাজুল ইসলামীর স্বেচ্ছাসেবীরা। সকাল ১০টার দিকে আজিমপুর কবরস্থানে বাবার কবরে তাকে সমাহিত করা হয়। দাফনের সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেয়া হয়েছে জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে।
বার্ধক্যজনিত সমস্যার কারণে গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সেখানে চিফ কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক খন্দকার কামরুল ইসলামের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। পরে প্রত্যাশিত উন্নতির লক্ষণ দেখতে না পাওয়ায় চিকিৎসকেরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ৯ মে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে (সিসিইউ) থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।
এর আগে, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেও একই ধরনের সমস্যার কারণে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
দীর্ঘ ছয় দশক ধরে পথ দেখিয়েছেন অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। অন্ধকার সরিয়ে আলোর পথে ধাবিত হতে নির্দেশনা দিয়েছেন। মৌলবাদ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ক্লান্তিহীনভাবে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। এখনো পর্যন্ত তিনি সঠিক পথের চলার দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।
আমাদের ভাষাচর্চার ক্ষেত্রে, গদ্যবিকাশের পর্বে, ব্যাকরণ ও প্রকাশ পদ্ধতির ক্ষেত্রে তার অসামান্য গবেষণা আমাদের দিকনির্দেশক হয়ে উঠেছে। বাঙালির গৌরব, বাংলাদেশের উজ্জ্বলতম অহংকার যে মুক্তিযুদ্ধ, সেখানেও তার উজ্জ্বল উপস্থিতি।
আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে তার গবেষণা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গবেষণাগ্রন্থ রচনার পাশাপাশি অনুবাদ ও সম্পাদনার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তিনি। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে কাজের জন্য ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ১৯৮৫ সালে একুশে পদক পান এই মুক্তিযোদ্ধা। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মুজিবনগর সরকারের অংশ ছিলেন তিনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
পুরস্কার ও সম্মাননা : জীবনে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে নীলকান্ত সরকার স্বর্ণপদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা, দাউদ পুরস্কার (১৯৬৫), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭০), একুশে পদক (১৯৮৫), আনন্দ পুরস্কার (১৯৯৩), রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডিলিট (২০০৫), এশিয়াটিক সোসাইটিতে (কলকাতা) ইন্দিরা গান্ধী স্মারক বক্তৃতা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শরত্চন্দ্র স্মারক বক্তৃতা, নেতাজি ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সে নেতাজি স্মারক বক্তৃতা, অনুষ্টুপের উদ্যোগে সমর সেন স্মারক বক্তৃতা, পদ্মভূষণ পদক (২০১৪) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.