বাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

চিতলমারীতে শ্রমিকলীগ সভাপতি জাহিদের মা ও মেয়ের হাতে ভিক্ষার ঝুলি

এবিএনএ: “আওয়ামী পরিবারের লোক হলি কি হবে ? আমরা তো আর হেলাল সাহেব বা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেহা করতি পারি না। বাপ-বেটা দু’জনের জান চলে গেল নৌকার গান গাতিগাতি আর দাড় টানতি টানতি। তবুও জীবনে সুখ হলো না। আজ জীবনের শেষে এসে ছোট্ট এই পুতনিকে নিয়ে হাতে উঠেছে ভিক্ষার ঝুলি। এ দুঃখ শোনার ও কেউ নাই, দেহারও কেউ নাই। পুত্র শোক বড় শোক, বাবা। শনিবার দুপুরে বাগেরহাটের চিতলমারী সবুজ সংঘ কাবের সামনে বসে কান্নাজড়িত কন্ঠে এ কথা গুলো বলছিলেন চরবানিয়ারী ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের প্রয়াত সভাপতি মোঃ জাহিদ শেখের বৃদ্ধ মা হাজেরা বেগম (৭০)। তিনি আরো জানান, তার স্বামী মোঃ আব্দুল শেখ আজ থেকে প্রায় ১৬-১৭ বছর আগে মারা যান। মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে জাহিদকে ঘিরেই তার আশার প্রদীপ জ্বলছিল। খেয়ে না খেয়ে তিনি জাহিদকে লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন। জাহিদের বাবা সারা জীবন আওয়ামীলীগ করেছে। নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার অপরাধে প্রকাশ্যে বিএনপির নেতা কর্মীর হাতে জুতা পিটার শিকার হয়েছেন। বিচার পায়নি কোনদিন। এ কষ্ট বুকে নিয়ে কবরে চলে গেছেন। বাকী ছিল জাহিদ। জাহিদও বিএনপির আমলে কম অত্যাচারের শিকার হয়নি। তারপরও দলের কাছে চায়নি কোনদিন কোন কিছু। তবুও জীবিকার তাগিদে চিতলমারী পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের ইজি বাইকের স্টাটারের কাজ করত। তার আয়ে স্ত্রী, ছোট্ট জোবায়েদা ও তাকে নিয়ে ৪ সদস্যের পরিবার চলত। খেয়ে না খেয়ে থাকলেও কোন অভিযোগ ছিলনা কারো প্রতি। গত আড়াই মাস আগে জাহিদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর তাকে খুলনার একটি প্রাইভেট কিনিকে ভর্তি করা হয়। ধার, কর্জ ও কারেন্ট সুদে টাকা নিয়ে চিকিৎসার ব্যয়ে খরচ হয় ৪ লাখ টাকা। এর দু’দিন পরে বাড়ীতে এসে জাহিদ মারা যান। এখনও বৃদ্ধ মা প্রায় দেড়লাখ টাকার দেনা। দেনার দায়ে বৃদ্ধ মা হাজেরা বেগম ও মেয়ে শিশু জোবাইদা দিশেহারা। তাইতো আজ শ্রমিকলীগ সভাপতি জাহিদের মা ও মেয়ের হাতে ভিার ঝুলি। এ ব্যাপারে বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা দেবাশীষ বিশ্বাস ও চিতলমারী উপজেলা যুবলীগের সাবেক নেতা গোবিন্দ দাস জানান , জাহিদ ও জাহিদের বাবা আব্দুলের আওয়ামীলীগের প্রতি যে অবদান রয়েছে তা স্মরণীয়। সেদিক দিয়ে বিবেচনা করে দলের পক্ষ থেকে জাহিদের বৃদ্ধ ও শিশু কণ্যার জন্য কিছু করা উচিত !

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button