এবিএনএ: ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা করে বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী শুরু হওয়া পরিবহন ধর্মঘটের প্রথম দিনে যাত্রী ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটের কারণে রাজধানীর সড়ক গণপরিবহন শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ। বিশেষ করে ভর্তি ও চাকরির পরীক্ষা দিতে আসা অংশগ্রহণকারীরা পড়েছেন বেশি বিপাকে।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা ‘ধর্মঘট’ শুরুর কারণেই এমন রূপ পেয়েছে ব্যস্ততম নগরীটি।গত বুধবার রাত ১২টা থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে বেড়ে গেছে ১৫ টাকা। এতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি মালিকরা শুক্রবার ভোর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয়। তবে বাস চালানোর বিষয়টি গতকাল রাত পর্যন্ত ধোয়াঁশায় ছিল। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ গতকাল বিকাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে বাস চালানোর কথা জানিয়েছেন। তবে রাতে বিষয়টি পরিষ্কার করে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে। সংগঠনটি জানায়, পণ্যবাহী যানের পাশাপাশি শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে বাস চালাবেন না বাস মালিকরাও। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ছয়টা থেকে বাস বন্ধ রয়েছে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।
শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন সড়কে দেখা যায়, ধর্মঘটের কারণে কোনো গাড়ি টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাচ্ছে না। যানগুলো টার্মিনালে আটকে রয়েছে। পরিবহন কাউন্টারগুলো বন্ধ ছিল। ঢাকার সড়কে অন্যান্য সময় যানজটে স্থবির থাকলেও আজ সেই রূপ নেই রাজধানীর সড়কে। অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে সড়ক। তবে ছোট ছোট যান বিশেষ করে সিএনজি ও রিকশা চলতে দেখা গেছে। চলতে দেখা গেছে বিআরটিসি বাস।
জরুরি কাজে টাঙ্গাইল যাবেন বলে সাতসকালে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে এসেছিলেন রেজাউল। কিন্তু বাস না পেয়ে দাঁড়িয়ে কিছু একটা ভাবছিলেন। তিনি জানান, জরুরি একটি কাজের জন্য তার বাড়ি যাওয়ার খুব প্রয়োজন ছিল। ধর্মঘটের বিষয়টি জানার পরও সকালে এসেছিলাম টার্মিনালে। সকালে হয়তো দুই-একটা বাস পেতে পারি এমন আশায় এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি কোনো গাড়িই চলছে না। উপায় না পেয়ে ঢাকার বাসায় ফেরত যাবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রেজাউলের মতো আরও অনেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য বিভিন্ন কাউন্টারগুলোতে জড়ো হয়েছেন। কিন্তু বাস না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন তারা। সকাল থেকে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীকে। অনেকে জানেনই না আজ ধর্মঘট। না জেনে বাসা থেকে নিজেদের গন্তব্যে যেতে বের হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। আবার অনেকে জানার পরও জরুরি প্রয়োজন বের হয়েছে। যাদের হাঁটা পথ দূরত্বে যেতে হয় তাদের সমস্যা না হলেও যাদের দূরে যাওয়া প্রয়োজন বাস না পেয়ে বিকল্প উপায়ে তারা রওনা হচ্ছেন গন্তব্যে।
চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকায় এসেছেন মমিনুল। শেষরাতে বাস থেকে নামার পর হোটেলে কিছু সময় বিশ্রাম নেন। কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য সড়কে এলে কোনো গাড়ি পাননি। শুধু সিএনজিচালিত অটোরিকশা থাকায় বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন তিনি। তার মতো হাজারো পরীক্ষার্থীকে ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
মমিনুলের মতে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করায় ভাড়া বাড়বে এটা নিশ্চিত। তাহলে পরিবহন ধর্মঘটের নামে সাধারণ মানুষকে কেন বিপদে ফেলা হয়েছে সে বিষয়টি জানতে চান তিনি। এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে চাপ পড়েছে ট্রেনে। সকাল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের চাপ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি দেখা গেছে। সকাল থেকে যেসব ট্রেন কমলাপুর ছেড়েছে সেগুলো যাত্রী বেশি ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায়। এছাড়া ঢাকায় আসা ট্রেনগুলোতেও ছিল অনেক যাত্রী। রংপুরে যাওয়ার জন্য কমলাপুরে অপেক্ষা করছিলেন আরিফ হাসান। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছে। যাওয়া খুব দরকার। বাস বন্ধ থাকায় উপায় না পেয়ে ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.