এবিএনএ : অন্যায়-অনিয়মে জড়িয়ে না পড়তে ছাত্রলীগকে নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সরকারের অগ্রযাত্রায় ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় নিজেদের ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, যারা দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট করবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো অন্যায়-অনিয়মে জড়িয়ে পড়া যাবে না। অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান সকলের জন্য অভিন্ন বার্তা বহন করছে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আখতারুজ্জামান, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন।
১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ওই সময় বিদেশে ছিলেন বলেই বেঁচে যান আমাদের নির্ভরতার ঠিকানা, আস্থার বাতিঘর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর আরেক সুযোগ্য কন্যা শেখ রেহানা। ১৯৮১ সালে আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা, উচ্ছ্বাস আবেগ দিয়ে বরণ করেছিলাম। প্রকৃতিও সেদিন অঝোর ধারায় ঝরছিল বঙ্গবন্ধুর প্রিয় কন্যাকে পেয়ে। প্রতিকূলতার স্রোত মাড়িয়ে, ইতিহাসের নানান বাঁক পেরিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও রক্তের উত্তরাধিকার ফিরে আসেন মুজিবহীন মুজিবের বাংলাদেশে। শুরু করেন দল গোছানোর কাজ। গড়ে করে তোলেন দলীয় ঐক্য। গড়ে তোলেন জাতীয় ঐক্য। স্বজন হারানোর বেদনাকে তিনি শক্তিতে রূপান্তর করেন। মানুষের জীবন বদলে দেয়ার মাধ্যমে খুঁজে নেন প্রিয়জন হারানোর বেদনা।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা আছেন বলেই ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। জাতির কলঙ্ক মোচন হয়েছে। তিনি আছেন বলেই যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে। পাপের বোঝা থেকে জাতি মুক্ত হয়েছে। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখাননি, দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে স্বপ্ন আকাশের সীমানা পেরিয়ে আকাশে পৌঁছাতে হয়। তারই নেতৃত্বে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ির অপপ্রচার থেকে বেরিয়ে আজ উদীয়মান অর্থনৈতিক পরাশক্তি। বলেই আজ বাংলাদেশে পারমাণবিক যুগে। বারে বারে মৃত্যুর হাত থেকে, ষড়যন্ত্রের নীলনকশা থেকে বেঁচে ফেরা শেখ হাসিনা এক মৃত্যুঞ্জয়ী বীর। তিনি ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে উড়ান সৃষ্টির পতাকা। তিনি মরণের মিছিলে দাঁড়িয়ে জয়গান গান জীবনের। সাহসী পরিশ্রমই মানবিক নেতৃত্ব জেগে আছেন বলেই বাংলাদেশ ঘুমাতে পারে। তাঁর নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।’
জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘অথচ তারা আজ অপপ্রচার চালায় দেশে ন্যায়বিচার নেই। ন্যায়বিচার তো দূরের কথা ২১ বছর আমরা বিচার চাইতে পারিনি। এই অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হয়েছিল। আজ মানবাধিকারের বুলি আওড়ায়। কারা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল? যার প্রাইম টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।’
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা বলে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সত্য উচ্চারণ করলে মির্জা ফখরুল সাহেবরা বলেন জেনারেল জিয়াকে ছোট করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কে নিরাপদে দেশ থেকে সরে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিল? কে খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে? মুজিব হত্যার বেনিফিশিয়ারি জিয়াকে খন্দকার মোশতাক প্রধান সেনাপতি বানিয়েছিলে। আমরা কথা বললে নাকি জিয়াউর রহমানকে ছোট করা হয়? খুনি এবং খুনের মদদদাতাকেও ইতিহাসের কাঠগড়ায় জবাবদিহি করতে হবে।’
বিএনপি এবং দুর্নীতি শব্দ দুটি সমর্থক মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়েও কথা বলে। তাদের সময় দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। নেত্রীকে তারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। দলীয় গঠনতন্ত্র হতে ৭নং ধারা বাতিল করে আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে তারা নিজেদের স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের মুখে অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে কথা বলা আর ভূতের মুখে রাম রাম একই কথা।’
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে সংগঠনটি সাবেক সভাপতি কাদের বলেন, ‘হত্যা ও ষড়যন্ত্রের কুশীলবরা এখনো আছে। এখনো দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। উন্নয়ন বিরোধী অপশক্তি এখনো চারপাশে মাথা লুকিয়ে আছে। উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এখনো সুযোগ খুঁজছে। তারা উন্নয়ন, শান্তি ও স্বস্তির বাংলাদেশ চায় না। এদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারা নিয়ে যেতে চায়। তাই সংঘাতে জর্জরিত রক্তময় প্রান্তর। সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ করতে চায়। চাই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পুরনো সুযোগ। কিন্তু যতক্ষণ শেখ হাসিনা আছেন, ছাত্রলীগের তরুণরা আসে ততক্ষণ কোনো ষড়যন্ত্রই হালে পানি পাবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ আগামী বিনির্মাণের অগ্রযাত্রা এগিয়ে যাবেই। সকল ষড়যন্ত্র মাড়িয়ে জনগণের ভালোবাসা এবং সমর্থন নিয়ে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে চলমান যাত্রা তা এগিয়ে যাবে অদম্য গতিতে অর্জুনের সোনালী দিগন্তে।’
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.