‘এশা’ নামে ডাকছে দর্শক, এটাই আমার কাজের বড় স্বীকৃতি: পূজা ক্রুজ
‘এশা মার্ডার’ ছবির সাফল্যে পূজা ক্রুজ বললেন— এখন দর্শকরা নামেই চিনে নিচ্ছেন, এমন ভালোবাসাই শিল্পীর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।


এবিএনএ: সিনেমা জগতে এখন এক নতুন পরিচিত নাম—পূজা ক্রুজ। ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রাপ্ত ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’ ছবিতে অভিনয়ের পর দর্শকের মুখে এখন ঘুরছে শুধুই ‘এশা’ নামটি। আর সেই নামেই এখন পূজাকে চিনে নিচ্ছে মানুষ। দর্শকের এমন ভালোবাসায় আপ্লুত পূজা বললেন, “যখন কেউ আমাকে এশা বলে ডাকে, তখনই মনে হয় এই পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।”
সিনেমাটির মুক্তির পর নিয়মিতই বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে যাচ্ছেন পূজা, সরাসরি দর্শকের অভিজ্ঞতা জানতেই এই প্রচেষ্টা। “অনেক মেয়েই এসে বলেছে, তাদের নামও এশা। তাই সিনেমাটি দেখতে এসেছে,” জানান তিনি।
পূজা বলেন, “এশা চরিত্রটি সম্পূর্ণ আমার বিপরীত। আমি চঞ্চল, প্রাণবন্ত। অথচ এশা চুপচাপ, শান্ত। তবুও একটা মিল আছে—দুজনেই স্পষ্টভাষী।” কঠিন পরিস্থিতিতে, শীতের রাতে রক্তাক্ত দৃশ্যের শুটিং কিংবা কস্টিউমের অস্বস্তি—সবই পেছনে ফেলে চরিত্রে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েছেন তিনি।
এই চরিত্রের জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়েছেন পূজা। প্রাচ্যনাটের অভিনয় স্কুলে ছয় মাসের কোর্স, থিয়েটারে ‘মলুয়া’ চরিত্রে পারফর্ম, পরিচালক সানী সানোয়ারের অধীনে ওয়ার্কশপ—সবই ছিল প্রস্তুতির অংশ। পূজার মতে, “আমি সিনেমা করতে এসেছি বলেই নাটকে যাইনি।”
এ ছবিতে তাঁর সহশিল্পী আজমেরী হক বাঁধনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়েও উচ্ছ্বসিত পূজা। “তিনি একজন সিনিয়র অভিনেত্রী হয়েও দারুণ আন্তরিক। আমার প্রশংসাও করেছেন, যা আমার আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়েছে।”
স্কুলজীবন থেকেই ছিল পূজার তারকাসুলভ মনোভাব। মঞ্চে নাচ করলেই দর্শক অপেক্ষা করতেন, কখন আসবেন পূজা, কখন শেষ হবে তাঁর নাচ। সেই মেয়েটিই এখন বড় পর্দায়।
শুধু অভিনয় নয়, পূজা ভালোবাসেন রান্না, ভ্রমণ আর বন্ধুদের খাওয়ানো। তাঁর হাতের গরুর মাংস আর ডিমের দোপেঁয়াজার প্রশংসা করেন সবাই। বন্ধুমহলে তিনি ‘রাঁধুনি’ নামেই পরিচিত।
পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে পূজা সবসময় ছিলেন দায়িত্বশীল। পড়াশোনা করেছেন টঙ্গীর নোয়াগাঁও স্কুল, হলি ক্রস কলেজ ও ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া থেকে। মা-বাবা আর ছোট দুই বোনের ভালোবাসা ও সাপোর্ট তাঁকে দিয়েছেন এগিয়ে চলার সাহস।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়েও স্পষ্ট পূজা। তিনি বলেন, “আমি বাণিজ্যিক সিনেমাতেই কাজ করতে চাই—নাচ, গান, অ্যাকশন, সব থাকবে।” আর যদি কখনও অভিনয় না করতেন? তাঁর এককথায় উত্তর—“অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্নই তো ছিল, আর কিছু ভাবিনি কখনো।”
‘এশা মার্ডার’ যেন সেই স্বপ্ন পূরণের একটি শক্তিশালী ধাপ। সময়ের গল্পে পূজা ক্রুজ আজ শুধু অভিনেত্রী নন, হয়ে উঠেছেন আত্মবিশ্বাসী এক অনুপ্রেরণা, যাঁকে এখন সবাই ডাকছে নিজের তৈরি করা চরিত্রের নামে—এশা।
Share this content: