আন্তর্জাতিকলিড নিউজ

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ইমানুয়েল ম্যাক্রন

এবিএনএ : ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম ধাপের ফলাফলে নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ধরে রেখেছেন মধ্যপন্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রন এবং উগ্র-ডানপন্থী ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এনএফ) পার্টির মেরিন লে পেন। ইতোমধ্যে ৯৬ শতাংশ ভোটগণনায় দেখা গেছে, ২৩.৯ শতাংশ ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থক ম্যাক্রন এবং লে পেন পেয়েছেন ২১.৭০ শতাংশ ভোট। এতে ম্যাক্রন তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারানোর পূর্বাভাস দিচ্ছেন বলে ভোট বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন।
আগামী ৭ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন প্রথম রাউন্ডে শীর্ষ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী ম্যাক্রন ও লে পেন। তাদের মধ্যে যিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন, তিনিই হবেন ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো, ফ্রান্স টু টেলিভিশনসহ ফরাসি বিভিন্ন গণমাধ্যম ম্যাক্রন ও লে পেনের দ্বিতীয় ধাপে উত্তীর্ণ হওয়ার সম্ভাব্যতার কথা আগেই জানিয়েছিল। ফ্রান্সের নির্বাচনী ব্যবস্থা অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম পর্বে যদি কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট অর্জন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচনে অংশ নেবেন শীর্ষ দুই প্রার্থী।
তবে নির্বাচনে কোনও প্রার্থী একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেননি। ম্যাক্রন ও লে পেন দ্বিতীয় ধাপে গেলেও খুব বেশি পিছিয়ে ছিলেন না ডানপন্থী রিপাবলিকান পার্টির নেতা ফ্রাঁসোয়া ফিলন এবং ফ্রান্সের কমিউনিস্ট পার্টি সমর্থিত কট্টর বামপন্থী জ্যঁ-লুক মেলেঁকন। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ফিলন ১৯.৯৮ শতাংশ এবং মেলেঁকন পেয়েছেন ১৯.৪০ শতাংশ ভোট।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ম্যাক্রন আশাবাদী। তাই হয়তো তিনি বেশি ভোট পেয়েছেন। গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৪৭ মিলিয়ন নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ৬৯ দশমিক ৪২ ভাগ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এই হার ২০১২ সালের চেয়ে কম। ম্যাক্রন (৩৯) মাত্র এক বছর আগে রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এর আগে তিনি ব্যাংকার এবং অর্থমন্ত্রী থাকলেও নির্বাচনে প্রার্থী হননি। ধারণা করা হচ্ছে, ৪৮ বছর বয়সী লে পেনের সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে ম্যাক্রনকে।
নির্বাচনের মাত্র তিনদিন আগেই সেখানে এক বন্দুকধারীর হামলার ঘটনায় একজন পুলিশ সদস্য মারা যাবার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বৃহস্পতিবারের সেই হামলার পর ফ্রান্সজুড়ে ৫০ হাজার পুলিশ এবং ৭ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় ফ্রান্সের নির্বাচনকে একটি মজাদার নির্বাচন বলে উল্লেখ করেছেন। প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে গতবারের তুলনায় এবার উত্তেজনাও বেশি বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন ফ্রান্সে দীর্ঘদিন বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী টি এম রেজা। প্রার্থীরা ফ্রান্সে অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। ইউরোপ, অভিবাসন এবং ফরাসি পরিচয় নিয়ে তাদের প্রত্যেকের চিন্তা-ভাবনা নাটকীয়ভাবে আলাদা। তবে ইস্যু হিসেবে সাধারণ ফরাসিদের কাছে অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থান বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে বলে জানান রেজা। তিনি বলেন, ফ্রান্সে অন্যান্য অভিবাসীদের মত বাংলাদেশি অভিবাসীরা প্রথাগতভাবে বামপন্থীদেরই ভোট দিয়ে আসছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button