লাইফ স্টাইল

পরীক্ষার জন্য শিশুকে প্রস্তুত করবেন যেভাবে

এবিএনএ : স্কুলে ভর্তির পর শিশুদের শুরু হয় আরেক যন্ত্রণা। আর সেটা হল পরীক্ষার ভূত! এ ভূত ঘাড়ে চাপলে টেনশনে শিশুর ঘাম ছোটার জোগাড় হয়। অনেক সময় আত্মবিশ্বাসের অভাবে শিশুরা জানা উত্তর পরীক্ষার খাতায় ভুল লিখে আসে। এজন্য অভিভাবকরা শিশুকে বকাঝকা করেন। কিন্তু দায়িত্বশীল অভিভাবক হিসেবে আপনি একবারও কি ভেবে দেখেছেন, এ সময় তার মনের অবস্থা কি হয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, আসলে পরীক্ষার আগে শিশুর মনে ফেল করার ভয় ঢুকে যায়। সেই সঙ্গে একাগ্রতার অভাবতো আছেই। এই দু’য়ের কারণে অনেক সময়ই তার পক্ষে পরীক্ষার প্রস্তুতি ঠিক মতো নেয়া হয়ে ওঠে না। ফলে চিন্তা আরও বেড়ে গিয়ে সমস্যা বাড়তেই থাকে।
আর সে কারণেই  দায়িত্বশীর বাবা-মা হিসেবে সন্তানের প্রতি আরো বেশি যত্নশীল হতে হবে। শিশুর পরীক্ষাভীতিকে তাড়িয়ে তার মনে সাহস বাড়াতে হবে আপনাকেই। শিশুর ভীতি কাটিয়ে পরীক্ষার জন্য তৈরি করতে কিছু পরামর্শ নিম্নে আলোচনা করা হল;

* প্রথমে সিলেবাসের ওপর নজর রাখুন। সিলেবাসে কতটা পড়া আছে তার ওপর ভিত্তি করে একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। আর সেই মতো কাজে লেগে যান। খেয়াল রাখবেন সময়ের মধ্যেই যেন সিলেবাসের সব পড়া শেষ হয়ে যায়।
* হাতে সময় থাকতেই সব পড়া শেষ করার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন পরীক্ষা যত এগিয়ে আসবে তত কিন্তু আপনার সন্তানের মনে ভয় ঢুকে যাবে, যার প্রভাব পড়বে পড়াশোনায়।
* পরীক্ষার ২-৩ সপ্তাহ আগে থেকে মডেল টেস্ট নিন। এতেই বুঝতে পারবেন আপনার সন্তান কতটা প্রস্তুত। এভাবেই আপনি বুঝতে পারবেন তার পরীক্ষার ফলাফল কেমন হবে? এবং এতে তার পরীক্ষাভীতিও কমে যাবে।
* বাবা-মা দুজনেই চাকরিজীবী হলে শিশুকে পড়ানোর খুব একটা সময় পান না তারা। ফলে শিশুকে প্রাইভেট টিউশনে পাঠানো ছাড়া উপায় থাকে না। তবে এক্ষেত্রে একটা জিনিস মনে রাখবেন। আপনার শিশু যদি শান্ত এবং বাধ্য হয় তাহলে তাকে আপনি নিজেই পড়াতে পারেন! ফোনে বা বাসায় ফিরে তার জন্য একটু সময় বের করতেই পারেন, এতে কোনো অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না।
* মায়েরা যদি চাকরিজীবী হন তাহলে অফিসে বেরনোর আগে মনে করে সন্তানকে হোমওয়ার্ক দিয়ে যাবেন। ফিরে এসে দেখবেন সে ওগুলো ঠিক মতো করেছে কিনা। যদি দেখেন আপনার বাচ্চা বাস্তবিকই ভালো করে পড়াশোনা করছে তাহলে তাকে উৎসাহ দিন। এতে পরীক্ষায় ভালো ফল করার আগ্রহ তৈরি হবে তার মধ্যে।
* যদি দেখেন সন্তান ঠিক মতো পড়ছে না তাহলে একটু রাগ করবেন। সেই সঙ্গে তাকে বোঝাবেন ফেল করলে কী কী খারাপ হতে পারে। ভুলেও বেশি কড়াকড়ি করবেন না কিন্তু! এমনটা করলে পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ কমে যাবে।
* পড়া সঠিকভাবে না বোঝা পর্যন্ত সন্তানকে পড়াবেন। এতে ধৈর্য হারাবেন না। শিশু কোন বিষয়টা বুঝতে পারছে না খেয়াল করুন এবং সেটি বেশি বেশি করে অনুশীলন করতে বলুন, দেখবেন এক সময় সে পড়াটা ঠিকই বুঝে যাবে।
* বেশি বেশি লিখিত পরীক্ষা নিন। একটা চ্যাপ্টার পড়া শেষ হলেই তার উপর পরীক্ষা নিয়ে নিন। এমনটা করলে আপনার বাচ্চার তাড়াতাড়ি লেখার অভ্যাস হয়ে যাবে এবং পরীক্ষার হলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
* রিভিশন খুব দরকারি একটি জিনিস। তাই পরীক্ষার আগে শিশুর হাতে যাতে রিভিশনের সময় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
এ পদ্ধতি অনুসরণ করে দেখুন ভালো ফল পাবেন। সেই সঙ্গে প্রতিনিয়ত শিশুকে উৎসাহ দিন।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button